পরম দয়াময় সৃষ্টিকর্তার নামে আরম্ভ করিতেছি

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা

জানা দরকার যে, প্রত্যেক নবীর ‘অছল এল্লাল্ল¬াহ্’ হইতেই হইবে। কিন্তু প্রত্যেক ‘অছল’ প্রাপ্ত ব্যক্তির জন্য নবী হওয়া শর্ত নহে। ইহাতে পরিষ্কার বুঝা যাইতেছে যে, গায়ের নবীরও ‘অছল এলাল্ল¬াহ্’ হয়।
আরো একটি কথা। প্রত্যেক নবীকেই ‘মামুর বিল্ল¬াহ্’ হইতে হইবে। কিন্তু প্রত্যেক ‘মামুর’ কৃত ব্যক্তিরই নবী হওয়া শর্ত নয়। ইহাতে পরিষ্কার বুঝা যাইতেছে যে, গায়ের নবীও ‘মামুর বিল্ল¬াহ’ হন।
এখানে একটি প্রশ্ন জাগে, যথা, তাহা হইলে নবী ও গায়ের নবীর মধ্যে প্রভেদ কি?
উত্তরঃ প্রভেদ অবশ্যই থাকে। যথা, নবী ‘বেলাওয়াছেতা’ ‘মামুর’ হন, গায়ের নবী ‘বিলওয়াছেতা’ ‘মামুর’ হন।
আর একটি সুক্ষ্ম বিষয় জানা দরকার যে, একই যুগে একাধিক ব্যক্তি ‘অছল’ প্রাপ্ত হইতে পারেন, কিন্তু ‘মামুর’ কৃত ব্যক্তি একজনই হনÑএকাধিক হইতে পারেন না। কারণ, ‘মামুর’ কৃত ব্যক্তি যুগের অদ্বিতীয় মানুষ। যেহেতু তিনি হন সমাজপতি বা জাতির চালক। আর যেহেতু দ্বীনি বা দুনিয়াবী কোন ক্ষেত্রেই একাধিক চালক থাকা যুক্তি বহির্ভূত। সেই জন্যই কোন যুগে একই সময়ে একাধিক নবীও হইয়াছেন, কিন্তু ভারপ্রাপ্ত একজনই থাকিতেন।
যাহা হোক, শেষ নবী হজরত মোহাম্মদ ছাল্ল¬াল্ল¬াহু আলাইহে ওয়াছাল্ল¬ামের পর নবীর দরজা বন্ধ, কিন্তু ‘অছল’ ও ‘মামুর’ হওয়া বন্ধ হয় নাই। বরং আল্লাহ্-পাক স্পষ্টভাবে ঘোষণা করিয়াছেন, তোমরাই উত্তম উম্মত, যেহেতু তোমরা নিজে সৎ কাজ করিবে ও সমাজে সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজ হইতে বাঁচিয়া থাকিবে ও সমাজে অসৎ কাজের নিষেধ জারী করিবে। আর যেহেতু নবীর কাজই হইল ‘আমর’ ও ‘নিহি’।
আরো জানা দরকার যে আলেমগণ ‘নায়েবে নবী’। ইহার অর্থ ঐ আলেমগণ যাহাদের ‘অছল এল্লাল্ল¬াহ্’ লাভ হয়। সকল আলেমই নহে। যখন জমানার অধঃপতন ঘটে তখন উক্ত নায়েবে নবীগণ তাহাদের দেলে উহা অনুভব করিতে পারেন। কিন্তু সকল নায়েবে নবীগণ ঐক্যবদ্ধ হইতে পারেন না। কারণ, প্রত্যেকেই নিজেকে সুযোগ্য মনে করেন, আর মূলত তাহারা সুযোগ্যও বটেন। কিন্তু এখানে তাহাদের একটি ‘ওরফানী’ ভুল হয়, যাহা নবীগণেরও হইয়া থাকে। যেহেতু সকলেই বুঝিতে পারেন যে একজনকে কেন্দ্র না করিয়া একতা কায়েম হইতে পারে না। আর স্বেচ্ছায় আনুগত্য স্বীকার না করিলে বলপূর্বক কেহই নেতৃত্ব করিতে পারেন না। তাই এইরূপ কঠিন সমস্যার যুগে আল্ল¬াহ্-পাক এক বান্দাকে ‘মামুর’ করিয়া উক্ত সমস্যার সমাধান করিয়া থাকেন। সেই ‘মামুর’ কৃত বান্দাই ‘খাস’ বান্দা, জমানার অদ্বিতীয় মানুষ। ইহাকেই বলা হয় ‘বান্দায়ে খাস কোনাৎ লুত্ফে আমরা’।
ইতিÑ
২৭/২৮ পৌষ, ১৩৮৯ বাং সন।