পরম দয়াময় ও করুণাময় আল্লাহর নামে
ফেরাউনের লাশ
কতকদিন যাবত ফেরাউনের লাশটার কথাই বার বার মনে পড়ছে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পূর্বে নীল নদের (মতান্তরে লোহিত সাগরের) পানিতে ডুবে মরেছিল যে ফেরাউন, আমি কেবল সেই ফেরাউনের লাশটির কথাই স্মরণ করছি।
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যে দেশবাসীর উন্নতি ও সুখ-শান্তির জন্য সে কি না করেছিল? যখন দেখল বিদেশি ও বিজাতীয় ইস্রাইল সন্তানগণ ধনে-জনে-প্রতিপত্তিতে পঙ্গপালের ন্যায় কেবল বেড়েই যাচ্ছে, তখন সে মিশরীয় সভাসদদের নিয়ে শলা পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিল যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিষ্কণ্টক করার জন্য ইস্রাইল বংশে জন্মগ্রহণকারী ছেলে সন্তানদের হত্যা করতে হবে এবং মেয়ে সন্তানদের ছেড়ে দেয়া হবে। এটাকে আল্লাহপাক বনী-ইস্রাইলদের জন্য কঠিন পরীক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন (কোরান ২ঃ৪৯)। দ্বিতীয়ত: বনী-ইস্রাইলদের মিশরীয়দের দাসত্বে নিয়োজিত রাখতে হবে। যাতে তারা আর কোন দিন মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। তৃতীয়তঃ দেশের গৌরব ও সুনাম বৃদ্ধির জন্যও ফেরাউন যুদ্ধাভিযানও চালিয়েছিল। অনেক হৃতরাজ্যও পুনরুদ্ধার করেছিল। যুদ্ধাভিযানে তার বীরত্ব ও সাহসিকতার কাহিনী পিরামিড ও মন্দির গাত্রে, পাহাড়-পর্বতে খোদাই করে বিভিন্ন চিত্তাকর্ষক মূর্তি ও স্তম্ভ তৈরী করে তাতে চিত্রায়িত করে রাখা হয়েছিল। স্থপতি হিসাবেও তার অনেক কীর্তি ছিল, যেমন করণকের হল-ঘর তৈরীকরণ, লাক্সের মন্দির নির্মাণ সম্পন্নকরণ, তার নিজের সুউচ্চ মূর্তি ও স্মৃতিস্তম্ভ এবং বিখ্যাত আবুসিম্বল মন্দির প্রভৃতি নির্মাণের কৃতিত্বও তারই। তাছাড়া অনাবৃষ্টি বা খরার সময় যাতে পানির অভাব না হয় সে জন্য খাল নালা খনন করা ও বাঁধ নির্মানেরও প্রমাণ পাওয়া যায়। সুতরাং দেশের উন্নতি ও প্রজা সাধারণের সুখ সমৃদ্ধির জন্য অনেক কিছুই সে করেছিল।
মিশরের সর্বত্র অনেক মন্দির ও উপাসনালয় ছিল। যেমন, হোরাসের মন্দির, আইসিসের মন্দির, ওসিরিসের মন্দির, আমেনরা-এর মন্দির, হোরেঙ্কুুর মন্দির, টাহ্-এর মন্দির প্রভৃতি। প্রত্যেক ফেরাউনের জন্যই স্বতন্ত্র রাজকক্ষ মন্দির ছিল। প্রত্যেক মন্দিরেই আচার্য পুরোহিত, যাজক প-িত ও শাস্ত্রকার ছিল। এ সমস্ত আচার্য পুরোহিত, প-িত শাস্ত্রকাররাই ছিল ফেরাউনদের সভাসদ ও মন্ত্রণা দাতা।
মহাবিক্রম এবং অত্যন্ত জাক-জমকের সঙ্গে ফেরাউন যখন শাসনদ- পরিচালনা করছিল, তখনই তার সম্মুখে উপস্থিত হলো বিদেশি বিজাতীয় নরঘাতক, রাজদ্রোহী, যাদু বিদ্যায় পারদর্শী এক ইস্রাইলী ইব্রীয় সন্তান, যার বাপ-মা ছিল মিশরীয়দেরই দাস্যকর্মে নিয়োজিত এবং সে নিজে বয়োপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত ফেরাউনের গৃহেই প্রতিপালিত হয়েছিল। সে এসে এক বিজাতীয় প্রভুর ভয় দেখিয়ে ইস্রাইল সন্তানদের দাস্যকর্ম থেকে মুক্ত করে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে চাইল। তার আস্পর্ধা ত কম নয়! যার প্রতাপে সারা মিশরবাসী উঠে বসে, বাঘে-ছাগে একঘাটে পানি খায়, সারা দেশবাসী যাকে মহান প্রভু হিসেবে আরাধনা করে, তাকেই কিনা ভয় দেখাচ্ছে এক দাস-সন্তান? এখন যদি এই নরঘাতক বিদ্রোহী যাদুকরের কথায় ভীত হয়ে ইস্রাইল সন্তানদের ছেড়ে দিতে হয়, তাহলে ফেরাউনের এত শৌর্য-বীর্য, মান-সম্মানের ঐতিহ্য আর থাকে কোথায়! সুতরাং এই বিজাতীয় বিদ্রোহী দাস-সন্তানের ভীতি প্রদর্শনে মাথানত করে কাপুরুষ সাজতে সে পারে না। আর দেশময় এত এত মন্দির উপাসনালয়ে সত্য শুদ্ধ সাধক বিজ্ঞ প-িত পুরোহিত যাজকবৃন্দ পবিত্র মনে দিনরাত পূজা-অর্চনা, তপ-জপ করছে, তাদের সকলের সব ধর্মকর্মই মিথ্যা হয়ে যাবে, আর এক ইস্রাইলী ইব্রীয় দাস-সন্তানের কথাই সত্য বলে প্রমাণিত হবে? এরূপ বিশ্বাস এতিহ্যবাহী ফেরাউনের পক্ষে অবমাননাকর ও মিশরবাসীদের পক্ষে অসহ্যকর। ইহা বিকৃত মস্তিস্কের প্রলাপ মাত্র। একথা কখনো মেনে নেয়া যায় না।
এরপর যখন একটার পর একটা দুর্যোগ ও দুর্ভোগ আসতে লাগলো, যেমন অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, ঝড়-তুফান-প্লাবন, মশা-মাছি, ভেক, পঙ্গপাল, রোগব্যাধি, মড়ক-মহামারী, অভাব-অনটন, দুর্ভিক্ষ, হত্যা-রাহাজানি, হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি-কাটাকাটি প্রভৃতি একটার পর একটা প্রচ-তর হয়ে আঘাত হানতে লাগলো তখন এগুলোকে প্রাকৃতিক বা দৈব-দুর্বিপাক মনে করে ধৈর্য ও সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করার জন্য উপর থেকে এন্তার উপদেশ বাণী বিতরণ করতে লাগলো। এ সমস্ত দৈব-দুর্বিপাক থেকে উদ্ধারের জন্য ধর্মভীরু সত্যশুদ্ধ সেবকগণ আরো নিষ্ঠার সাথে ধর্মানুষ্ঠান পালন করতে লাগলো। দেশের সর্বত্র ধর্মীয় সভার আয়োজন করে সকল প্রকার পাপাচার থেকে তওবা করে নিষ্ঠার সাথে ধর্ম পালন করার জন্য দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে লাগলো।
দেশ ও দশের দুঃখ-কষ্ট স্বচক্ষে দেখার জন্য মহামান্য প্রভু ফেরাউন দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত রথ চক্রযানে আরোহন করে ছুটে বেড়াতে লাগলো। ঐতিহ্যবাহী মিশরীয়দের সাহস ও ধৈর্যের কথা বলে তাদের মনে বল ও শক্তি সঞ্চার করতে লাগলো। দৈব-দুর্বিপাকে তাদের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে, সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য আবার পূর্ণ উদ্যমে উৎপাদনের কাজে কঠোর পরিশ্রম করার জন্য উৎসাহ দিতে লাগলো। দেশবাসীও এতে বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা পেল। মাঠে ময়দানে আবার সোনার ফসল দেখা গেল। জনগণও ফসলের অবস্থা দেখে বেশ আস্বস্ত হল। তারা ভাবতে লাগলো, শান্তির দিন এই এলো বলে। কিন্তু ফসল তোলার পূর্বক্ষণে আবার এক দুর্যোগ নেমে এসে সমস্ত ফসল নষ্ট করে দিয়ে গেল। সকল আশা আকাক্সক্ষা ধুলিসাৎ হয়ে গেল। ভীষণ হতাশায় আবার তারা ধুকতে লাগলো।
প্রভু ফেরাউন আবার নতুন পরিকল্পনা নিয়ে দেশবাসীর কাছে হাজির হলো। আবার নতুনভাবে উদ্ধুদ্ধ করতে লাগলো। জনগণও তেমনি আশায় আশায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এক পরিকল্পনার পর আরেক পরিকল্পনার পিছনে দৌড়াতে লাগল।
যাহোক নতুন পরিকল্পনা মতে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু হলো। আবার আশা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা গেল। পঞ্চমুখে প্রভু ফেরাউনের জয়গান শুরু হয়ে গেল। কিন্তু আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে তা আর পূরণ হতে পারলোনা। কোথা হতে কিভাবে যে এমন ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে এলো, তারা ভাবতেও পারলো না। তাদের সম্পূর্ণ ত্যাগ, সম্পূর্ণ পরিশ্রম সম্পূর্ণভাবে নিষ্ফল হয়ে গেল।
এমনিভাবে এক পরিকল্পনার পর আরেক পরিকল্পনা রচিত হতে লাগলো, দেশবাসীও এক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেক কঠিনতর দুর্যোগে পতিত হতে লাগলো। ঐশীগ্রন্থে দশটি প্রধান প্রধান আঘাতের কথা উল্লেখ আছে।
কিন্তু ফেরাউন কি এই দুর্যোগের কারণ কিছুই জানতে পারেনি? আমরা জানি ফেরাউন এবং তার ঘনিষ্ঠ সভাসদবৃন্দ দেশবাসীর উপর এই দুর্যোগ নেমে আসার কারণ অবশ্যই জেনেছিল। কারণ হযরত মুছা (আঃ) এই দুর্যোগ সম্বন্ধে তাকে পূর্বাহ্নেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন। মিশরাধিপতি এক ফেরাউন যদি হযরত মুছা (আঃ) এর কথায় কর্ণপাত করত তাহলে মিশরের উপর এই দুর্যোগ কখনো আপতিত হত না। সুতরাং দেশের সুখ-শান্তি সমৃদ্ধি বা শোক-দুঃখ অভাব-অনটন একজন মাত্র ব্যক্তির বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের উপরই নির্ভরশীল ছিল।
যাহোক, দেশবাসীর অকল্যাণের হোতা যে ফেরাউন, হযরত মুছা (আঃ) ও বনী-ইস্রাইলদের পশ্চাদ্ধাবন করতে যেয়ে যখন তার সলিল সমাধি হলো, দেশবাসী বুঝল, দেশকে শক্রমুক্ত করতে যেয়েই তাদের প্রাণ-প্রিয় জনদরদী জাতীয় নেতার এই অকাল মৃত্যু হয়েছে। সুতরাং দেশের আবালবৃদ্ধবনিতা নারীপুরুষ সবাই অশ্রুশিক্ত নয়নে জড়ো হলো সেই সাগরের পাড়ে। তন্ন তন্ন করে খুঁজতে লাগলো তাদের প্রাণপ্রিয় প্রভু ফেরাউনের লাশ। অনেক অনুসন্ধানের পর যখন পেল, শোকাভিভূত দেশবাসী সেই লাশটাকে রাজকীয় সম্মান ও মর্যাদায় নিয়ে এল রাজ দরবারে। সুউচ্চ রাজকীয় শবাধারে রাখা হলো সেই লাশ দেশবাসীর দেখা ও শোক প্রকাশের জন্য। দূর-দূরান্ত হতে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা দল বেঁধে আসতে লাগলো সেই লাশটাকে একনজর দেখার জন্য। দেশীয় প্রথানুযায়ী সত্যসাধক যাজক পুরোহিতগণ দল বেঁধে পালাক্রমে শবাধারের চারপাশ ঘিরে পাঠ করতে লাগলো তাদের শাস্ত্রীয় বাণী ও জাতীয় শোক-গাঁথা। আর দেশবাসী সবাই নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী কেউ দিল ফুলের মালা, কেউ দিল স্বর্ণ-রৌপ্যের অলংঙ্কার। আবার কেউ বা দিল চুনি-পান্না-হীরা-জহরতের কণ্ঠহার। দেশীয় আচার অনুযায়ীই মমি করা ও শোক জানানোর জন্য সত্তর দিন পর্যন্ত সেই লাশ রাখা হলো রাজকক্ষ মন্দিরের ভিতর সিংহী ও নারী মুখাকৃতি বিশিষ্ট শবাধারের উপর। তারপর নির্দিষ্ট দিনে অত্যন্ত জাকজমকের সঙ্গে এবং পূর্ণ রাজকীয় মর্যাদায় সেই লাশ সমাহিত করা হলো মহান রামেসিসের বৃহত্তর পিরামিড মন্দিরে।
পবিত্র মহা গ্রন্থে উল্লেখ আছে, ফেরাউন যখন সাগর জলে হাবু-ডুবু খাচ্ছিল এবং যখন বুঝল তার অন্তিম সময় সন্নিকটে, তখন সে বলল, “আমি ঈমান আনলাম সেই প্রভুর উপর যার উপর ইস্রাইল সন্তানগণ ঈমান এনেছে। তিনি ছাড়া আর ত কোন মাবুদ নেই, আমিও অনুগতদের শামিল হলাম” (কোরান ২ঃ৯০ )। এর জবাবে তাকে বলা হলো ‘এতক্ষণে’! কিন্তু একটু আগেও ত তুমিই অবাধ্য ছিলে। আর তুমিই ত গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের সামিল ছিলে। যাক আজকে তাহলে তোমার দেহটাকে রক্ষা করব যাতে তুমি তোমার উত্তরসূরীদের জন্য নিদর্শন হিসেবে গণ্য হও (কোরান ১০ঃ ৯১-৯২)। আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী এই লাশটা মমিকৃত হয়ে যুগ যুগ ধরে রক্ষিত হয়ে আসছে এবং তা’ বর্তমানে বৃটিশ মিউজিয়ামে আছে।
কিন্তু কথা হচ্ছে, এই ফেরাউনের উত্তরসূরী পৃথিবীবাসী কি এই লাশটা থেকে কোন শিক্ষালাভ করেছে বা এখনও করছে? সমগ্র মিশরবাসীর শোক অনুতাপ প্রকাশ, মালা-অলঙ্কার অর্পণ, ঠাকুর-পুরোহিত আচার্যদের পূজা প্রার্থনা পাঠ কি ফেরাউনের আত্মার কোন শান্তি বিধান করতে পেরেছে? পবিত্র মহাগ্রন্থে যাকে অভিশপ্ত জালেম ও জাহান্নামী বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তখন কারো শোক প্রকাশ, পূজা প্রার্থনা পাঠ, ফুল মালা বা মূল্যবান অলংকারাদি অর্পণ তার জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। এটাই আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু তার সেই দেশবাসী যারা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শোক ও প্রার্থনা করেছে, তাদের কি বিশ্বাস? তাদের ত বিশ্বাস লক্ষ কোটি দেশবাসী, পাক পবিত্র সাধক যাজক, প-িত, পুরোহিতবৃন্দ যার জন্যে অশ্রু নয়নে খালেছ দিলে পূজা প্রার্থনা করছে, তা’কি কখনো বৃথা যেতে পারে? কিন্তু আমরা জানি, এই ফেরাউন আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ হযরত মুছা (আঃ) এর অবাধ্যতাচারণ করেছিল। তার এই অবাধ্যতাচারণের জন্যই তার শত সহস্র জনকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক কাজকর্ম সত্বেও তার উপর জ্বীন-ইনছান, ফেরেশতা এবং আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হচ্ছে। এই অভিশাপের ফলশ্রুতিতেই তার নাম যুক্ত হয়ে আছে আরেক অভিশপ্ত বাদশাহ নমরূদের সঙ্গে। যতদিন এই মাটি ও এই আকাশ বিদ্যমান থাকবে, ততদিন পর্যন্ত তাদের উপর অভিসম্পাত হতেই থাকবে। এটাই হল আল্লাহপাকের পক্ষ থেকে চুড়ান্ত ফয়সালা। লক্ষ কোটি মানুষ তার প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করলেই আল্লাহও তাকে রেহাই দেবেন, এটার দলিল-প্রমাণ কোথায়? শুধুমাত্র একজন লোকের জন্য পৃথিবী আবাদ হয়, আবার একজন মাত্র লোকের জন্যই পৃথিবী ধ্বংস হয়। এর নজির রয়েছে আমাদেরই পবিত্র মহাগ্রন্থে। একমাত্র ব্যক্তি নূহ (আঃ) এর কথার অবাধ্যতার জন্যই মহাপ্লাবনে কওমে-নূহকে ডুবিয়ে মারা হয়েছিল। একমাত্র ব্যক্তি হুদ (আঃ) কে অমান্য করার কারণেই আদ জাতিকে এবং একমাত্র ব্যক্তি ছালেহ (আঃ) কে অমান্য করার কারণেই ছামুদ জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছিল। এরূপ আরো অনেক বর্ণনা পবিত্র গ্রন্থে রয়েছে।
মিশর দেশ ও মিশরবাসীদের জন্য যে ফেরাউন নিজের জীবন দিল, সেই ফেরাউন সম্বন্ধে বর্তমান পৃথিবীবাসীর কি রায়? ছোট বড় অজ্ঞ-মুর্খ, পাপী-তাপী, সৎ-অসৎ প্রত্যেকের নিকট এই ফেরাউন অভিশপ্ত কাফের ধর্মদ্রোহী বলেই পরিচিত। কিন্তু তার সমসাময়িক কালে সে কি হিসাবে পরিচিত ছিল? মহানুভব, প্রজাবৎসল, দেশপ্রেমিক, জনদরদী এবং অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাতীয় নেতা হিসাবেই সম্মানিত হয়েছিল।
আর তার সমসাময়িক কালে মিশরবাসীদের কাছে হযরত মুসা (আঃ) পরিচিত ছিলেন বনী-ইস্রাইলদের মধ্যে ইব্রীয় গোত্রের সন্তান, প্রতিপত্তিহীন একজন অতি সামান্যলোক হিসেবে। তাঁর বিরুদ্ধে আবার ছিল নরহত্যার অভিযোগ। তাঁর সমগ্র জাতি মিশরীয়দেরই দাস্যকর্মে নিয়োজিত। সুতরাং এহেন মুছাকে অস্বীকার করার কারণেই যে কেউ বিশ্বপ্রভুর অভিশাপ পেতে পারে, তাঁর সমসাময়িক কালে অতি অল্প সংখ্যক ব্যতীত অধিকাংশ মানুষের পক্ষেই একথা বিশ্বাস করা ছিল অকল্পনীয় বিষয়।
সমসাময়িককালে জনগণ কর্তৃক প্রেরিত পুরুষকে অস্বীকার করা হলো আদম সন্তানদের চিরন্তন ব্যাধি। এই ব্যাধিকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ পবিত্র কালামে বলেছেন, আমার বান্দাদের জন্য আফসোস। এমন কোন রাসূল আসেননি যাকে তাঁর কওমের লোকেরা উপহাস বিদ্রুপ না করেছে (কোরান ৩৬ঃ ৩০)। সুতরাং আল্লাহ যখন যাকেই পাঠান না কেন কোন না কোন যুক্তি দেখিয়ে তাঁকে একবাক্যে অস্বীকার করা বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে তাঁর বিরোধীতা করাই হচ্ছে মানবজাতির চিরন্তন ব্যাধি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা বর্তমান জগতদ্বাসী কি এই ব্যাধি থেকে মুক্ত? আমরা বর্তমান মানব জাতি অন্তত আমরা যারা আল্লাহর প্রেরিত কিতাব ও প্রেরিত পুরুষগণের উপর ঈমান রাখার দাবী করি, আমরা কিন্তু এক বাক্যে নমরূদ, ফেরাউন, আবু জাহেল, আবু লাহাব প্রমুখদের কঠোর ভাষায় নিন্দা করে থাকি, যেহেতু তারা সকলেই তাদের কাছে প্রেরিত পুরুষদের অস্বীকার করেছিল এবং কঠোরভাবে তাঁদের বিরুদ্ধাচারণ করেছিল। এখন ধরুণ, আল্লাহ যদি কাউকে মনোনীত করে আমাদের কাছে প্রেরণ করেন, আমরা কি একবাক্যে তাকে মেনে নিতে পারব? আমরা কি তেমন ব্যক্তিকে অস্বীকার করার জন্য আমাদের সমস্ত দৈহিক ও মানসিক শক্তি প্রয়োগ না করে এমনিতেই স্বীকার করে নিতে পারব? আমরা যদি তেমন ব্যক্তিকে সহজভাবে গ্রহণ করতে না পারি, তাহলে ফেরাউনের লাশটা থেকে আমরা আর কি শিক্ষা লাভ করলাম? আমাদের কাছে প্রেরিত ব্যক্তিকে অস্বীকার করার কারণে আমাদের নামও কি নমরূদ ফেরাউনদের সঙ্গে যুক্ত করে পরবর্তীকালের লোকগণ, আমাদের দোষারোপ করবে না, যেরূপ বর্তমানে আমরা নমরূদ ফেরাউনদের দোষারূপ করে থাকি? সুতরাং নমরূদ-ফেরাউনদের, আবু জাহেল-আবু লাহাবদের দোষারোপ করার পূর্বে অন্তত আমাদের নিজেদের বিচারটা আগে করে নেয়া উচিত নয় কি? বিচার ঠিক না হলে নমরূদ, ফেরাউন, আবু জাহেল, আবু লাহাবের উপর যে অভিসম্পাত হচ্ছে ততোধিক অভিশাপ কি আমাদের উপরও বর্ষিত হবে না? উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরে আমাদের বুঝান হয় “মা কানা মোহাম্মদুন আবা আহাদিম মের রেজালেকুম অলাকের রাসুলাল্লাহে অখাতামান্নাবিয়্যিন”-অর্থাৎ মোহাম্মদ (দঃ) তোমাদের মধ্যস্থ কোন পুরুষের পিতা নহেন, কিন্তু তিনি আল্লাহর রাছুল এবং নবীগণের ‘খতম’। আরো বলা হয় “আল ইয়াওমা আকমালতু লাকুম দ্বীনাকুম অ আতমামতু আলাইকুম নেয়মাতি অ রাজিতু লাকুমুল ইসলামা দ্বীনা” অর্থাৎ আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূরা করে দিলাম, তোমাদের উপর আমার নেয়ামতের পরিপূর্ণতা দান করলাম এবং তোমাদের দ্বীনের উপর আমি রাজী হলাম। আরো বলা হয় হজরত রাছুল করিম (দঃ) বলেছেন, “লা নাবিয়া বা’দী” অর্থাৎ আমার বাদ কোন নবী নেই। এ সমস্ত আল্লাহর কালাম ও নবী (দঃ) এর পবিত্র বাণী উদ্ধৃত করে শেষে বলেন, “আমরা বাপু এর উপর আছি, এর বাইরে যেতে আমরা রাজী নই।”
তাহলে এ সমস্ত পবিত্র বাক্য যারা শুনান তাদের সম্বন্ধে কি বলা যাবে যে ফেরাউনের লাশটা থেকে এরা কোন শিক্ষালাভ করেছেন বা নমরূদ, ফেরাউন, আবু জাহেল, আবু লাহাবদেরকে দোষারোপ করার অধিকার তাদের আছে?
তাদের এই একগুয়েমি দেখে বলতে ইচ্ছে করে যে আল্লাহপাক যখন বলেছেন যে এই পৃথিবীর উত্তরাধীকারীত্ব একমাত্র আমার এবং আমার মোমেনদের জন্য তখন আপনারা চীন, জাপান, ফ্রান্স, জার্মান, ইস্রাইল, আমেরিকা, রাশিয়া প্রভৃতি দেশগুলোতে যারা দোর্দ- প্রতাপে রাজত্ব করছেন এবং একটা একটা করে মুসলমান দেশগুলোকে গ্রাস করছেন বা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এদের উপর প্রভুত্ব করছেন, তাদের কাছে গিয়ে উপরোক্ত পবিত্রবাণীগুলো কেন একবার শুনিয়ে আসছেন না এবং বলছেন না যে, বাপু, তোমরা আবার কোত্থেকে এসেছ?
যখন ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম নেই, মোহাম্মদ ছাড়া অন্য কোন নবী নেই, আর মুসলমান ছাড়া অন্য কোন উম্মত নেই, তখন এই পৃথিবীর বাদশাহী ত একমাত্র আমাদেরই। তোমরা কেন বাপু আল্লাহর কালাম অমান্য করে আমাদের বাদশাহী কেড়ে নিচ্ছ, নাক-কান মলে দিচ্ছ, গালে চপেটাঘাত করছ, আর পিঠে চাবুক মারছ?
এই বেলা কিন্তু দেখা যাবে, বিনা পরিশ্রমে ‘মান্না’ ও ‘ছালওয়া’ খাওয়ার পরও ‘শক্তগ্রীব’ ইহুদীদের যতই কানমলা, চপেটাঘাত আর চাবুকের কষাঘাত খাওয়ার জন্য ‘মুছার’ সঙ্গে বিদ্রোহ করে সেই ‘ফেরাউনের’ দিকেই ছুটতে শুরু করেছেন।
তাদের যুক্তি শুনে আরও বলতে ইচ্ছে করছে যে, ইব্রাহীম যখন আগুনে জ্বলছে তখনও তারা আজরের পৈতার মায়া ছাড়তে পারছে না। অর্থাৎ আমি ত ইব্রাহীমকেই মানি। ইব্রাহীমের অনুসারী হিসেবে আমার ত উচিৎ ইব্রাহীমকে আগুন থেকে উদ্ধার করা। কিন্তু আগুনে ঝাপ দিলে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত গলায় যে আজরের পৈতা ঝুলান আছে তাত পুড়ে যাবে। তাহলে ইব্রাহীমকে আর কিভাবে উদ্ধার করা যায়। সুতরাং ইব্রাহীমই আগুনে পুড়ে মরুক, আর আজরের পৈতাই বেঁচে থাকুক। অর্থাৎ মোহাম্মদ ও ইসলাম ধ্বংস হয়ে যাক ‘লা নাবীয়া বাদীর পৈতাই জেতা রহো’।
এবার আসুন দেখা যাক ফেরাউন বর্তমানে কোন অবস্থায় আছে। সৃষ্টির প্রথম মানবটি থেকে শুরু করে শেষ মানবটি পর্যন্ত ছোট বড়, অজ্ঞ-মূর্খ, পাপী-তাপী, সৎ-অসৎ প্রত্যেকেই দেখছে যে, ঐ সেই ফেরাউন। শৌর্য-বীর্য, জ্ঞান-গরিমা, প্রভাব-প্রতিপত্তিতে দুনিয়ার সামান্য জিন্দেগানীতে সে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রভু বলে গর্ব করেছিল। কিন্তু আজ সে এক অজ্ঞ-জাহেল অন্ধ-মূক বধির জালেম বেইনসাফগার ছাড়া কিছুই নয়। কারণ, সে হযরত মুছা (আঃ) এর মত এত বড় একজন জলিল ও কদর নবীকে দেখা এবং তাঁর এত এত নিদর্শন দেখা সত্ত্বেও সে কিছুমাত্র দেখতে শুনতে বা বুঝতে পারেনি। এ সেই ফেরাউন! যে নিজেকে অত্যন্ত বিজ্ঞ, প-িত, বুদ্ধিমান, কৌশলী ও শক্তশালী বলে মনে করত, অথচ সে হযরত মুছা (আঃ) এর প্রদর্শিত নিদর্শন থেকে কোন জ্ঞানই আহরণ করতে পারেনি। সুতরাং সে অজ্ঞ, মূর্খ, অন্ধ, বধির, মূক ছাড়া আর কি হতে পারে?
পবিত্র মহাগ্রন্থে উল্লেখ আছে যে দোযখবাসীরা দুনিয়ায় ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা করবে। ফেরাউন ও তাই দুনিয়াতে ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা করবে। তার এই আশা আকাক্সক্ষার বিষয়টি রূপকের ভাষায় নিম্নে বর্ণনা করা হচ্ছে।
“রে নির্বোধ। দুনিয়াতে ফিরে গিয়ে তুই কি করবি? তোর পূর্বেও ত তোরই মত একজনকে শাহান শাহ বানিয়েছিলাম। সে আমার খলিল ইব্রাহীমের সঙ্গে কিরূপ ব্যবহার করেছিল এবং তার পরিণতি কি হয়েছিল সে বিবরণ কি তোর কাছে পৌঁছেনি? তুই না এত জ্ঞানী, বুদ্ধিমান, কৌশলী ও শক্তিশালী ছিলি। তা থেকে তুই কি কোন শিক্ষাই লাভ করতে পারলি না ?”
এর উত্তরে ফেরাউন বলছে “প্রভুগো! আমি ত রাজকর্ম, রাজ্যশাসন ও প্রজা পালনেই সর্বক্ষণ ব্যস্ত থাকতাম। ধর্ম বিষয়ে ত আমি এত মাথা ঘামাতাম না। এ বিষয়ে ত আমি যাজক-আচার্য, মোল্লা-পুরোহিতদের উপরই নির্ভর করতাম। দেখতাম, তারা সারাদিনরাত খেয়ে না খেয়ে তোমার শাস্ত্র পাঠ করছে, তোমার নাম তপ্-জপ্ করছে। কত সুন্দর পূত পবিত্র জীবন যাপন করছে। ধর্ম বিষয়ে এরা যে ফতোয়া দিত, তাই আমরা সত্য বলে মেনে নিতাম। তাদের বর্ণিত মতের উর্ধ্বে বা বাইরে অন্য কোন মত বা পথ থাকতে পারে বলে বিশ্বাস করতাম না। হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর সন্তান হযরত ইউসুফ (আঃ) যখন মারা গেলেন, তখন প্রচার করা হয়েছিল যে ইউসুফ (আঃ) এরপর আর কোন নবী আসবেন না (৪০ঃ৩০)। একথাই যাজক, প-িত, পুরোহিত ও আচার্যগণ বুঝাত এবং আমরা এ কথাই বিশ্বাস করতাম। তখন হযরত মুছা (আঃ) কে আর কিভাবে সত্য সত্যই তোমার নবী বলে বিশ্বাস করতে পারি? তাদের কথাতেই প্ররোচিত হয়ে আজ আমি এই শাস্তি ভোগ করছি। প্রভুগো! আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য আমাকে আর মাত্র একটিবার দুনিয়াতে পাঠিয়ে দাও। এবার আর আমি কোন মতেই ভুল করব না।”
প্রভু বললেন, “ঠিক আছে, তোর চোখের পর্দা দূর করে দিলাম। এবার তুই দুনিয়ার দিকে একবার তাকিয়ে দেখ্। দুনিয়া দেখার পর যদি আবারও সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা হয়, তাহলে না হয় পাঠিয়ে দিব।”
দুনিয়ার দিকে একনজর তাকিয়েই ফেরাউন বলে উঠল, “আস্তাগফেরুল্লা, প্রভুগো! তুমি আমাকে ক্ষমা করো। দুনিয়াতে ফিরে যাওয়ার আকাক্সক্ষা আমার মিটে গেছে। মাবুদ গো! এক মুছা নবীর কথা মানতে ভুল করেছিলাম বলে আজ আমার এই শাস্তি। কিন্তু দুনিয়াতে আজ এত মুছা, এত ইছা আর এত মোহাম্মদ যে এদের মধ্যে কে সত্য, আর কে মিথ্যা, তা বেছে বার করার শক্তি আমার নেই। দ্বিতীয়তঃ পূর্বে যেমন বলা হত “ইউসুফ (আঃ) এর পর আর কোন নবী আসবেন না।” এ কথাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে হযরত মুছা (আঃ) এসেছিলেন, আর আমি তাকেই অস্বীকার করেছিলাম। এখনও যদি ‘লা নাবীয়া বাদী’র পর্দা অতিক্রম করে সত্য সত্যই কেউ এসে পড়েন, আর মোল্লা পুরোহিত ও জনগণের মতের বিরুদ্ধে তাকে মান্য করি, তাহলে আমার ভয় হচ্ছে মোল্লা পুরোহিত ও জনগণ হয়ত আমাকে জীবন্ত কবর দেবে। আর যদি তাদের ভয়ে সেই প্রেরিত পুরুষকে মানতে না পারি, যেমন পূর্বেও পারিনি, তা’হলে মোল্লা, পুরোহিত ও জনগণের পক্ষ থেকে ভক্তি-শ্রদ্ধা ও ফুলের মালা হয়ত পূর্বাপেক্ষা বেশীই পাবো, কিন্তু তোমার পক্ষ থেকে? সুতরাং আমার লাশ দেখেও যারা শিক্ষালাভ করেনি, তাদের শাস্তি দেখে আমি তৌবা করছি, দুনিয়াতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা আমার আর নেই। তাদের শাস্তির তুলনায় আমার এ শাস্তিত বেহেশ্তখানাই।”
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে পবিত্র মহাগ্রন্থে হযরত মোহাম্মদ (দঃ) কে হযরত মুছা (আঃ) এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে (৭৩ঃ১৫)। সুতরাং হযরত মুছা (আঃ) এরপর যেমন প্রেরিত পুরুষ আসা বন্ধ ছিলনা; তখন স্বতঃসিদ্ধ ভাবেই বলা যায় যে তাঁরই তুল্য নবী হযরত মোহাম্মদ (দঃ) এর পরও আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত পুরুষ আসা বন্ধ থাকতে পারে না। ৭২ দলে বিভক্ত বিপথগামী মুছায়ীদের পথ প্রদর্শনের জন্য যদি প্রেরিত পুরুষ আসার প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে ৭৩ দলে বিভক্ত বিপথগামী মোহাম্মদীয়দের পথ প্রদর্শনের জন্য কোন প্রেরিত পুরুষ আসতে পারবে না একথা যারা বলছেন, তারা যে কেউ হোন, তাদের সাথে ঐক্যমত হয়ে ফেরাউনের পরিণতি ভোগ করার মত শক্তি ও সাহস আমাদের নেই। ফেরাউনের লাশটা থেকে আমরা এরূপ দুর্বল হওয়ার নিদর্শনই পাচ্ছি। আমাদের এই দর্শন কি কোরান-হাদিস এজমা-কিয়াসের বিরুদ্ধে হলো? আমাদের এই দর্শন যদি কেউ ভুল প্রমাণ করতে পারেন তাহলে নিশ্চয়ই আমরা আমাদের এই দর্শন থেকে তওবা করব।
আল্লাহ আমাদেরকে সত্য ও সঠিক পথেই পরিচালিত করুন এবং সত্যের উপর ছাবেত কদমে রাখুন।
অ আখেরে দাওয়ানা আনেল হামদুলিল্লাহে রাব্বিল আলামিন।